Related Post
Challenges faced by VC’s to find the right startup for investment
Category: Blog
E-commerce firms face scrutiny for using dark patterns in sales
Category: Blog
ধরুন একদিন ঘুম থেকে উঠে মোবাইলের ডাটা অন করেই আপনি একটি ভিডিও পেলেন, যা দেখে আপনার চক্ষু চড়কগাছ! এটি একটি খুবই অশ্লীল ভিডিও এবং ভিডিওর মানুষটি আপনি নিজে। আপনি নিজে খুব ভালো করেই জানেন যে এমন কোনও ভিডিওতে আপনি নেই, কিন্তু ভিডিওতে যাকে দেখছেন তাকে দেখতে তো অবিকল আপনার মতোই! শুধু তাই নয়, চোখ, নাক, মুখ, গলার স্বর, হাসি সবই হুবহু আপনার মতোই! খুব দ্রুত এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে কিন্তু আপনি কাউকে বোঝাতে পারছেন না, সমাজে মুখও দেখাতে পারছেন না। যদিও এখানে আপনি নির্দোষ।
আবার ধরুন একদিন এমন একটি ভিডিও পেলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, যেখানে দেখলেন দেশের গুরুত্বপূর্ণ কোনও ব্যক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছেন বা ভুলভাল কিছু বার্তা দিচ্ছেন। আপনি বিশ্বাস করে সেটি শেয়ারও করলেন। পরে জানলেন সেটি সত্যি নয়।
বা একদিন সকালে আপনার কাছের কেউ একজন, আপনাকে ফোনে বললেন যে তাঁর চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন তাই আপনি যেন তাঁকে সাহায্য করেন। আপনি হয়তো বিশ্বাসের স্বার্থে তাঁকে ভিডিও কলে আসতে বললেন এবং দেখলেন যে সত্যিই আপনার কাছের কোনও মানুষ। আপনি সরল মনে বিশ্বাস করে টাকা পাঠিয়ে দিলেন এবং শেষমেশ জানতে পারলেন যে আপনার পরিচিত কেউ আপনার থেকে টাকা চায়নি এবং এটি একটি স্ক্যাম। আপনার মাথায় হাত! কী করবেন এবার!
আসলে এগুলো সবই হলো সিন্থেটিক রিয়েলিটি। আরও সোজা ভাষায় বললে ডিপফেক বা এক্কেরে নিখুঁত মিথ্যা। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে কোনও মানুষের হুবহু নকল ভিডিও বানানো সম্ভব। যেমন ধরুন আপনি আপনার একটি ভিডিও নিলেন এবং হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজের একটি ছবি নিলেন, এখন দুইটির মিশ্রণে সম্পূর্ণভাবে নতুন একটি ভিডিও তৈরি হলো যেখানে টম ক্রুজ, আপনার কথাগুলো তাঁর ভঙ্গিতে বলছেন! এটিই হলো ডিপফেক।
বলাই বাহুল্য, যত দিন যাচ্ছে ততই এই প্রযুক্তিটি আরো নিখুঁত ভাবে নকল ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে। মেশিন লার্নিং হলো ডিপফেক বানানোর প্রধান অস্ত্র। এটির উত্তরোত্তর উন্নতির ফলে যে কারও গলার স্বরও হুবহু নকল করা সম্ভব। এই পুরো ব্যাপারটা খালি চোখে ধরা খুবই কঠিন ব্যাপার।
আমরা এখন বাস করছি ডিজিটাল যুগে এবং মানুষের কাছে আজকাল খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া সম্ভব। কোনও খবর দ্রুততার সঙ্গে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চেয়ে ভালো মাধ্যম এখনও অব্দি নেই। গুজব হোক বা বিভ্রান্তি বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ খবর, সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তে ছড়িয়ে যায় দুনিয়ার মানুষের কাছে। সত্য-মিথ্যা যাচাই তো অনেক পরের কথা। আর ঠিক এখানেই জিতে যাচ্ছে ডিপফেক টেকনোলজি। মানুষের চিন্তা-ভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ করার এর চেয়ে সহজ পন্থা আর দু’টি নেই।
ডিপফেক আমাদের কাছে বিভিন্ন উপায়ে আসতে পারে।
১) টেক্সটচুয়াল ডিপফেক
২) ভিডিও এবং ছবি
৩) ডিপফেক অডিও
৪)সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডিপফেক
৫)লাইভ ডিপফেক
সেলিব্রিটিদের নকল পর্ন ভিডিও থেকেই ডিপফেক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে মহিলা সেলিব্রিটি যেমন জেনিফার লরেন্স, এমা ওয়াটসন, গ্যাল গ্যাডটের মতো তারকারাও এর থেকে ছাড় পাননি। পর্নগ্রাফিক ভিডিওর জন্য ভাইরাল হয়েছিলেন সমাজমাধ্যমে। তাছাড়া রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে ফেক ভিডিও তো হামেশাই বেরোচ্ছে।
এমনকি সম্প্রতি কেরালায় প্রথমবার এই ধরনের স্ক্যাম হয়েছে। রাধাকৃষ্ণান নামে ওই ব্যক্তির কাছে তাঁর পুরনো কলিগের ডিপফেক বানিয়ে, ভিডিও কল করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৪০,০০০ টাকা।
মোদ্দা কথা হলো এরকম ঘটনা দিন দিন বাড়বে বই কমবে না। এই বিষয়গুলি আক্ষরিক অর্থেই প্রযুক্তির ক্যান্সার। কোথায় এর শেষ, জানা নেই কারও। অনেক গবেষণাই চলছে এই নিয়ে তবে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের উচিত সদা সতর্ক থাকা। এই বিষয়ে বিস্তারিত পাবেন পরবর্তী প্রতিবেদনে। চোখ রাখুন bolograhak.Com -এ
সতর্ক থাকবেন সর্বদা। গোপনীয়তা রক্ষা করতে শিখুন। সোশ্যাল মিডিয়া বুঝেশুনে ব্যবহার করবেন। এবং সহজেই কাউকে বিশ্বাস করে আর্থিক লেনদেনে যাবেন না। কারণ এ ছাড়া অন্য কোনোও বিকল্প এখনও আমাদের হাতে নেই। বহুদিন আগেই ‘দ্য ওয়াল’ স্ট্রিট জার্নালের রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান ফ্রান্সেসকো মার্কোনি বলেছেন-
“পরবর্তী প্রজন্মের যত গুজব সংবাদ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পরিচালিত হবে।“
আসলেই কিন্তু তাই হচ্ছে। সবে তো শুরু। কে বলতে পারে পরের টার্গেট আপনিই কি না!
Category: Blog
Category: Blog
Your Comment