ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দিনদিন বেড়ে চলেছে প্রতারণার অভিনব পদ্ধতিও। কম-বেশি প্রতারণার শিকার প্রায় সব মানুষই। এছাড়াও আজ-কাল হামেশাই অনলাইন ট্রানজাকসনের ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। তাই সাবধান থাকুন।
সতর্ক থাকতে মনে রাখুন দশটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
১. নিজের নেট ব্যাংকিং পাসওয়ার্ড , ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (OTP), এটিএম বা ফোন ব্যাংকিং-এর পিন নম্বর, সিভিভি(CVV) নম্বর, বা মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ কখনও কাউকে জানাবেন না। এমনকি আপনি যে ব্যাংকের গ্রাহক, সেই ব্যাংক থেকেও কেউ যদি এই সমস্ত তথ্য জানতে চায় তাহলেও জানাবেন না। কারণ, কোনও ব্যাংক কখনই তার গ্রাহকের থেকে এই তথ্যগুলো চাইতে পারে না। কোনো সন্দেহজনক মেইল পেলেও তাতে সাড়া দেবেন না। এরকম ঘটনার সম্মুখীন হলে শীঘ্রই আপনার ব্যাংকে গিয়ে অভিযোগ জানান।
২. প্রত্যেকটি ব্যাংক একাউন্টের জন্য আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। যাতে কেউ আন্দাজ করতে না পারে। পাসওয়ার্ড খুব সহজ রাখবেন না। অনলাইন ব্যাংক একাউন্টের ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড নির্দিষ্ট দিন পরপর বদলে দেবেন। এতে সুরক্ষিত থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৩. অনলাইনে টাকাপয়সা লেনদেনের ক্ষেত্রে কখনই পাবলিক কম্পিউটার বা ক্যাফে, পাবলিক ওয়াইফাই ইত্যাদি ব্যবহার করবেন না। আপনার ব্যক্তিগত অনেক গুরত্বপূর্ণ তথ্য এতে ফাঁস হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। যদি একান্তই কখনও প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে ভার্চুয়াল কী বোর্ড ব্যবহার করবেন।
৪. প্রত্যেকবার ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের সাহায্যে ব্যাংকিং পোর্টাল বা ওয়েবসাইটে ঢুকে অনলাইন লেনদেন করলে, অতি অবশ্যই প্রত্যেকবারই লগ অফ্ করবেন। এবং, লেনদেন সম্পূর্ণ হলে প্রত্যেকবারই ব্রাউজিং ডাটা ক্লিয়ার করবেন।
৫.যখনই কোনো অনলাইন টাকাপয়সা লেনদেন করবেন ব্যাংকিং ওয়েবসাইট দ্বারা অবশ্যই সেটি যাচাই করে নেবেন। দেখে নেবেন ‘https’ আছে কি না কারণ মনে রাখবেন এই ‘s’ মানে কিন্তু সিকিউর অর্থাৎ নিরাপত্তা আছে।
৬. অনলাইনে নিজের ব্যাংকিং একাউন্ট প্রায়শই চেক করবেন। কোনরকম সন্দেহজনক লেনদেন দেখতে পেলে তৎক্ষণাৎ আপনার ব্যাংকে জানাবেন। সবসময় আপনার ব্যাংকের ক্রেতা সুরক্ষা(customer care) নম্বর নিজের কাছে রাখবেন যাতে প্রয়োজন হলে সহজেই পাওয়া যায়।
৭. ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটি করার সময় নিজে কার্ড ব্যবহার করুন। কোনও সেলস পার্সন বা অন্য কারো হাতে সেটি দেবেন না।
৮. ব্যাংক থেকে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড এলে দেখে নেবেন সেটি সম্পূর্ণ ভাবে সিল করা আছে কি না বা কোথাও সন্দেহজনক লাগছে কি না। যদি থাকে অতি সত্ত্বর ব্যাংকে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানাবেন। এবং কার্ড পাওয়ার পর অতি অবশ্যই পিন (PIN) নম্বর বদলে নেবেন।
৯. আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আপনার মোবাইল নম্বর রেজিষ্টার করে রাখুন। এবং নোটিফিকেশন সাবস্ক্রাইব করে রাখুন যাতে কোনরকম সন্দেহজনক লেনদেন হলে শীঘ্রই সে খবর আপনার কাছে পৌঁছায়।
১০. ‘কম সময়ে বাড়ি বসে রোজগার করুন’ বা ‘কম টাকা বিনিয়োগ করে লাভবান হন কম সময়ে।’ মনে রাখবেন এগুলো সবই এক প্রকার স্ক্যাম। তাই এই ধরনের স্ক্যামগুলি এড়িয়ে চলুন। এই অফারগুলো দেখতে শুনতে যতটা সুন্দর আদতে কিন্তু ততোটাই বিপজ্জনক।
ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে সতর্ক কিন্তু আপনাকে থাকতেই হবে। যদি আপনি কখনো অনলাইন টাকাপয়সা লেনদেনের ক্ষেত্রে কখনও প্রতারণার সম্মুখীন হয়েছেন, কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। মনে রাখবেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রতিবাদ হলে তবেই অন্যায় রুখে দেওয়া সম্ভব।
বলো গ্রাহক। কাস্টমার রাইটস ম্যাটার।
Your Comment