শিশুরাই আগামীকালের ভবিষ্যৎ। তাই দেশের প্রত্যেকটি শিশুরই উন্নত মানের শিক্ষা প্রাপ্য। প্রতিটি শিশুর বাবা-মা চান তাঁর সন্তান যেন সবচেয়ে উন্নতমানের শিক্ষা পায়। আর এই কারণে সবসময়ই তৎপর থাকেন তাঁরা। পছন্দের কেরিয়ার বাছাই করা থেকে শুরু করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে স্কুলের গুরুত্ব রয়েছে। তাই আপনার পরিবারের খুদের জন্য কোন প্লে স্কুল ঠিক হবে বা আপনি আপনার সন্তানকে উচ্চশিক্ষার জন্য কোন স্কুলে বা কলেজে ভর্তি করবেন, এই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায় আপনার একার নয়, আমাদের ওপরেও সামাজিক ভাবে বর্তায়।
দেখুন এমনিতেই যুগটাই বিজ্ঞাপনের। শঙ্খ ঘোষ তো বলেই গেছেন ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে।’ আর যত বেশি বিজ্ঞাপন তত বেশি সেই জিনিসের আকাশচুম্বী চাহিদা। আর এই সেরার প্রতিযোগিতায় যে কোনও বিষয় পছন্দ করা বা বিচার খুব কঠিন। বোঝা দুরূহ। এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়। একটা কথা মনে রাখবেন, সব সময় টাকা দিয়েই মান বিচার করা যায় না। কোনও স্কুল মোটা মাইনে নিচ্ছে বলেই যে তার পরিষেবা ভালো হবে, এমনটা নাও হতে পারে। ওদিকে দেখানোর প্রতিযোগিতা, এদিকে দেখে পরখ করে নেওয়ার দায়। আবার একটা ঠিকঠাক মাইনে নেওয়া স্কুল বা কলেজও অনেক ভালো পরিষেবা প্রদান করতে পারে। কাজেই সন্তানকে স্কুলে বা কলেজে ভর্তির সময় শুধু পড়াশোনা নয়, সন্তানের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। কাজেই, সঠিক পদক্ষেপ এক্ষেত্রে কী?
চিন্তায় পড়ে গেলেন তো? ভাবছেন এ তো খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজার অবস্থা। কারণ এতো স্কুল বা কলেজের বিজ্ঞাপনের আড়ম্বরের ভিড়ে সঠিক বেছে নেওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ কী হতে পারে? আর এই ব্যস্ততার যুগে প্রত্যেকটি স্কুল বা কলেজে গিয়ে গিয়ে নিজে তদারকি করে আসা সম্ভব হয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। আর ঠিক এইখানেই আমরা সাহায্য নিই টেকনোলজির। ওয়েবসাইট থেকে তথ্য পাওয়া যায় বেশ কিছু। কিন্তু যা বলা থাকে তাই যদি না হয় তার দায় কে নেবে? যেখানে এটা শিক্ষার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষেত্র এবং আপনার সন্তানের ভবিষৎ। প্রথমত, এই ডিজিট্যাল যুগে নিজেদের টেক-নির্ভর দাবি করার পরেও, স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রিভিউ চাইলে আপনি পাবেন না আবার পেলেও হাতে গোনা কয়েকটা। আসলে আমরা কেউ রিভিউ দিই না কারণ অত গুরুত্বপূর্ণ না ভেবে এড়িয়ে চলি। অথচ রিভিউ দেখলে আমাদের সেই বিষয় সম্পর্কে ধারণা অনেকটা দৃঢ় হয়। তবুও এ বিষয়ে কজন সচেতন!
এ তো গেল মেইন কোর্স। এবার সাইড ডিশ থুড়ি ডিসিশন হিসেবে অব্যর্থ কোনও কোচিং সেন্টারে ভর্তি করা বা স্পোর্টস বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা। সেখানেও সেই একই সমস্যা। সম্পূর্ণ তথ্য আপনি বাড়ি বসে পাবেন না। আর তাই যাই-ই শেখান নাচ, গান, আঁকা বা আবৃত্তি সব জায়গাতেই একই সমস্যা। জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে আমরা সকলেই আজকাল খুব ব্যস্ত। আর এই কারণেই আমরা এতো টেকনোলজি নির্ভর। আর কেবল নির্ভর হলেই হবে না, টেকনোলজির সম্পূর্ন ব্যবহার জানতে হবে। না হলেই সময়ের অপব্যাবহার। সেক্ষেত্রে রিভিউ দেওয়া, আপডেটেড ওয়েবসাইট আছে কি না সহ বিস্তারিত তথ্য, সহজে তথ্য পাওয়া যায় এবং টেক স্যাভি প্রতিষ্ঠান বাছুন। হাতের মুঠোয়, ডিজিটাল ভাষায় বলতে গেলে ‘ডাটা’ আপনি তখনই নাগালে পাবেন যখন আপনি টেকনোলজির সঠিক ব্যবহার জানবেন। এবার সচেতন হওয়ার সময় এসেছে।
সন্তানের জন্য কোন স্কুলের পরিবেশ সবচেয়ে ভালো হবে, বা কোন স্কুলে পড়াশোনা করলে সন্তানের সর্বাঙ্গীন বিকাশ ঘটবে সেই সিদ্ধান্ত কিন্তু আসলে আপনার হাতেই। তাই ভাবুন এবং বিজ্ঞান এবং টেকনোলজির সঠিক এবং সম্পূর্ণ ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, আজকের শিশুরাই আগামী ডিজিটাল জেনারেশনের ভবিষ্যত। আর সেই ভবিষৎ গড়ে তোলার দায় আপনারও।
Your Comment