Aug 10, 2023 528 views

‘রাইট টু রিপেয়ার!’ নতুন আইন অনুযায়ী জেনে নিন নিজের অধিকার

Category: Blog

মোবাইল তো বর্তমানে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের এক অত্যাবশ্যক অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন যে আমরা মোবাইলের কোনও পার্ট খারাপ হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটি মেরামত করার বদলে কেন মোবাইলই বদলে নিই? অনেক ক্ষেত্রেই এর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায় অনুমোদিত দোকান ছাড়া বাইরে মেরামত করার খরচা। এটা এতোটাই বেশি থাকে যে মনে হয় এর চেয়ে নতুন নিয়ে নেওয়াই ভালো। তাছাড়া ওয়ারেন্টি শেষ হয়ে গেলে সার্ভিস সেন্টারে তেমন কোনো সুবিধা পাওয়া যায় না।  বেশিরভাগ বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা যায়। এমনকি বাইক বা গাড়ির ক্ষেত্রেও সামান্যতম সমস্যা হলেও অথরাইজড সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে দৌড়ানো ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকে না। বাইরের মিস্ত্রির থেকে যদি একটি নাট-বল্টুও টাইট দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রেও ওয়ারেন্টি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এবং এই আশঙ্কায় ভুগতে থাকেন বেশিরভাগ গ্রাহক। এবং ঠিক এই কারণেই কোম্পানির সার্ভিস সেন্টারের উপর ভরসা করে থাকতে হয়। আর ঠিক এইখানেই যে বৃহৎ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তা হল, সামান্য রিপেয়ারিং করলেও দিতে হয় লেবার চার্জ। এমনিতেই সমস্যার শেষ নেই পাশাপাশি এরকম হাজারো সমস্যায় সাধারণ মানুষের অবস্থা একেবারে শোচনীয়।

তবে সমস্যা থাকলে তার সমাধানও ঠিক বের হয়। যেমন এই দুর্ভোগের থেকে পরিত্রাণ দিতে সরাষ্ট্র হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভারত সরকার এবং উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় (MCA) দ্বারা ভারতের ‘রাইট টু রিপেয়ার’ অর্থাৎ মেরামতের অধিকার কার্যকর করা হয়েছে। ‘রাইট টু রিপেয়ার’ নামে নতুন পোর্টালও চালু করা হয়েছে।

 

এই নতুন আইনে মেরামতের অধিকার অনুযায়ী কী বলা হয়েছে জানেন কি?

ওয়ারেন্টি সংক্রান্ত সুবিধা গুলি পাওয়ার জন্য গ্রাহকদের একই ব্র্যান্ডের সার্ভিস সেন্টারে যেতে হবে না। এই আইন গ্রাহকদের তাদের এলাকার যে কোন থার্ড পার্টি স্টোর বা বাইরের দোকান থেকে সেটি ঠিক করার স্বাধীনতা প্রদান করে। ‘রাইট টু রিপেয়ার’ বা মেরামতের অধিকার যে রাতারাতি মেন স্ট্রিমে পরিণত হবে না সেটাই স্বাভাবিক। তাই সার্বিকভাবে চার ধরনের প্রোডাক্টে পাবেন এর সুবিধা যথাক্রমে:

১. মোবাইল ও ইলেকট্রনিক্স

২.অটোমোবাইল ইকুইপমেন্ট

৩.কনজিউমার ডিউরেবলস বা ভোগ্য পণ্য

৪. ফার্মিং ইকুইপমেন্ট।

এই চারটি সেক্টর অনুযায়ী প্রোডাক্টগুলি কে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্মার্ট ফোন, ট্যাবলেট, হেডফোন, ল্যাপটপ  ইত্যাদির পাশাপাশি টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন, মিক্সার গ্রাইন্ডার, স্কুটার, মোটরসাইকেল ইত্যাদি এবং কৃষিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসমূহ এর অন্তর্ভুক্ত। ইতিমধ্যেই এই পোর্টালে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে হিরো মোটোকর্প (Hero MotoCorp), হোন্ডা মোটরসাইকেল অ্যান্ড স্কুটার ইন্ডিয়া (HMSI), স্যামসাং (SAMSUNG), বোট (BOAT), প্যানাসোনিক(PANASONIC), অ্যাপেল(AIPH) ইত্যাদি সংস্থাগুলি। এই পোর্টাল থেকেই এইসমস্ত রেজিস্টার্ড সংস্থার সমস্তরকম তথ্য পাওয়া যাবে।বর্তমানে উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তর যত বেশি সংখ্যক সংস্থাকে এই পোর্টালের আওতায় আনা যায় সেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

আপনার গেজেট সারাতে পারবেন এবার আপনিই ।খারাপ হলে নিয়ে যেতে পারবেন যে কোন দোকানে। কোম্পানি অনুমোদিত দোকানে না নিয়ে যাওয়ার জন্য শেষ হবে না ওয়ারেন্টিও। আবার যেমন রেজিস্টার সংস্থার ক্রেতারা বর্তমানে বাইক বা স্কুটার কেনার প্রথম দিন থেকেই কোন ত্রুটি ধরা পড়লে বাইরের কোন মেকানিকের থেকে মেরামত করাতে পারবেন। আবার কোন যন্ত্রাংশ বা স্পেয়ার পার্টস্ ক্রেতাদের কাছেও অনেক বেশি সহজলভ্য হবে। এমনকি এই পোর্টালটি গ্রাহকদের অনলাইন অভিযোগ সমাধানের বিকল্প ছাড়াও আইনি পরামর্শ পাওয়ার জন্য একটি ফোরাম অফার করছে। এখানে গ্রাহকেরা তাদের অভিযোগ সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে আইনি পরামর্শের জন্য  আইনজীবী এবং অন্যান্য আইন বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। অতএব নিজের অধিকার নিজে জেনে নিন। বিভ্রান্তির হাত থেকে এবং প্রতারিত হওয়ার হাত থেকে বাঁচুন।

Your Comment

Related Post